ভূতুড়ে শিশু : ঘানার আনুষ্ঠানিক হত্যাকান্ড

ভূতুড়ে শিশু : ঘানার আনুষ্ঠানিক হত্যাকান্ড


ঘানার শিশু


ঘানার উত্তরাঞ্চলে প্রতি বছর একটি অনির্দিষ্ট সংখ্যক শিশুর দল হারিয়ে যায় কিংবা মৃত্যুবরণ করে। কারণ ঘানা বাসিন্দারা মনে করে যে সংখ্যক শিশুর দল কোনভাবে অশরীরী আত্মার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়িয়ে দিতে পারে।

দারিদ্রতা আর পুরোনো কুসংস্কার থেকে ঘানা বাসিদের মন থেকে এই বিষয়টির ব্যপারে কোন ধরনের উন্নতি সাধন করা যাচ্ছিল না। কারো সঠিক ধারণা নেই যে ঠিক এই কারণে প্রতি বছর কত সংখ্যক শিশু মৃত্যু বরণ করছে। তবে সংখ্যাটা যে হাজারের থেকেও বেশি তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। একই চিত্র দেখা যায় পার্শ্ববর্তী দেশ বেনিন, বুরকিনো ফাসো নাইজেরিয়ার কিছু অংশে।
অনেক বছর ধরেই ঘানা সরকার বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ঘানা বাসিদের মাঝে বিভিন্ন কার্যক্রম শিক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু তেমন কোন অগ্রগতি হচ্ছিল না। ঘানা বাসিরা মনে করত যেসব শিশুদের অশরীরী শক্তি ভর করে তাদের মেরে ফেলাই উচিত, তা না হলে তারা তাদের প্রতিদিনের দুর্ভাগ্য দোষের কারণ হবে।
এই প্রথাটি একদম শিশুদের জন্ম গ্রহন থেকেই শুরু হয়ে যেত। পরিবারে যদি কেউ অসুস্থ হয় কিংবা অভাব অনটন দেখা দেয় তাহলে পরবারের শিশুদের দষারোপ করা হত। এবং পরবর্তীতে ওদের স্থানীয় ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হত। একবার প্রমাণিত হলে শিশুদের স্থানীয় একধরনের বিষাক্ত তরল খাইয়ে দেওয়া হত। আর এতেই নিরপরাধ শিশুরা ঢলে পড়ত মৃত্যুর কোলে।
২০১৩ সালে, এই সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন ঘানার পুরষ্কার প্রাপ্ত সাংবাদিক আনাস। তিনি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন। একদম মূল উৎস থেকে তথ্য বের করে এনে ঘানা বাসিদের সামনে উপস্থাপন করেন। আর এর ফলে ঘানা সরকারের কাছেও বিষয়টি সমাধান করা সহজ হয়ে যায়। এই কর্মকাণ্ডে জড়িত ওঝাদেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং শাস্তি দেওয়া হয়।

সূত্র :- Al Jazeera

Post a Comment

Previous Post Next Post