বোফোর্ড পুসার |
১২ আগস্ট, ১৯৬৭ এর কিছু দিন আগে, ম্যাকনেইরি কাউন্টি শেরিফ বোফোর্ড পুসার শহরের বাইরে সড়কের পাশে একটি ঝামেলা
সম্পর্কে একটি কল পেয়েছিলেন। তার স্ত্রী পলিন তার সাথে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত
নিয়েছিলেন। তারা টেনেসি শহরের দুর্ঘটনার জায়গাটি ঘোরে দেখছিলেন। একটি গাড়ি তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়।
হঠাৎ গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে পুষারের গাড়ি লক্ষ করে
গুলি ছোঁড়া শুরু করে। পলিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পুসারের বাঁ পাঁজরে দুই রাউন্ড গুলি
বিদ্ধ হয়। পুসার শুধু মারা যাওয়ার বাকি ছিল। শেষমেশ সে বেঁচে যায়, তার সুস্থ হতে
১৮ দিন সময় লেগেছিল ও একটি সার্জারির প্রয়োজন হয়েছিল।
যখন সে তার ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিল তখন সে
ছিল একজন নিঃসঙ্গ স্ত্রীবিহীন পুরুষ। তার মাথায় শুধু একটা বিষয়ই গুরপাক খাচ্ছিল,
আর সেটা হল প্রতিশোধ। সে প্রতিজ্ঞা করে যে মৃত্যুর আগে হলেও সে তার স্ত্রীর
খুনিদের খুঁজে বের করবে এবং তাদের সে নিজ হাতে শাস্তি প্রদান করবে।
পুসার একজন শান্তিপ্রিয় মানুষ ছিলেন। তিনি ম্যাকনিরি কাউন্টিতে জন্মগ্রহন করেন এবং সেখানেই বেড়ে উঠেন। তিনি লম্বায় ছিলেন
৬ ফুট ৬ ইঞ্চি। যার কারণে তিনি ফুটবল ও বাস্কেটবল ভাল খেলতে পারতেন। স্কুল শেষের
পর তিনি শিকাগোতে যান এবং সেখানে তিনি লোকাল রেসলার বনে যান।
রেসলিং এর কারণে তিনি অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।
তখন তার পলিন এর সাথে দেখা হয়। কিছুদিন প্রেম করার পর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের দুই
বছর পর পুসার তার জন্মস্থানে ফিরে আসেন।
যদিও তখন তার মাত্র ২৫ বছর বয়স ছিল, তিনি
ওখানকার পুলিশ কনস্টেবলদের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। তার দুই বছর পর তিনি শেরিফ
হিসেবে পদোন্নতি পান।
শেরিফ হিসেবে নিয়োগ পাবার পর তিনি তার কাজের
দিকে মনযোগি হন। তিনি প্রথমে ডিক্সী মাফিয়া এবং স্টেট লাইন মবকে এই দুইটি গ্যাং এর উপর নজর দেন। যারা টেনেসি এবং মিসিসিপির মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবৈধ
কার্যকলাপ চালাচ্ছিল।
পরের তিন বছরের মাথায় তিনি তিনবার আততায়ীর
দ্বারা আক্রমনের শীকার হন। তার কাজের জন্য তিনি সবার কাছে প্রশংসনীয় হন। তিনি তার
এলাকায় জাতীয় নায়ক হিসেবে পরিচিতি পান।
তাই যখন পুসারের স্ত্রী মারা যান তখন তার ভিতর
এক সুপ্ত প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠে।
কিছুদিন পর, তিনি চারজন হত্যাকারী্র
নাম প্রকাশ করেন, পাশাপাশি ডিক্সির মাফিয়ার নেতা কিরকি
ম্যাকক্রাড নিক্স জুনিয়র নামও অভিহিত করেন। নিক্সকে কখনোই বিচারের সম্মুখীন করা
হয় নি, কিন্তু পুসার নিশ্চিত করেছিলেন যে এই এলাকার অবৈধ কার্যকলাপ আগের তুলনায় আরো
বেশি কঠিন হয়ে উঠবে।
কয়েকবছর পর সেই হত্যাকারীদের একজন গুলিবিদ্ধ
অবাস্থায় পাওয়া যায়। অনেক মানুষ মনে করেন যে পুসার নিজে সেই হত্যা করেছিল বা কাওকে
দিয়ে করিয়েছিল। আরো কয়েকবছর পর টেক্সাসে আরো একজন খুনিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মৃত
পাওয়া যায়। তখন আবার গুজব ছড়িয়ে পড়ে পুসারই তাকে হত্যা করেছে।
আরেক খুনি নিক্স, অনেকগুলি খুনের দায়ে তাকে জেলে
যেতে হয়েছিল। জেল থেকে বেরোবার পর সে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। অনেকেই মনে করেন
এই গাড়ি দুর্ঘটনাটিও পুসারের হাতেই হয়েছিল। কিন্তু এইসব কখনোই তদন্ত করা হয়নি।
এবং এর মাধ্যমেই পুসারের প্রতিশোধ শেষ হয়েছিল।
পুষারের জীবন নিয়ে পড়ে মুভিও তৈরি হয়েছিল। মুভির নাম ‘Walking Tall’